প্রকাশিত: Tue, Dec 19, 2023 11:35 PM
আপডেট: Sat, Jun 28, 2025 5:54 AM

[১]ট্রেনে আগুনে শিশু সন্তানকে বুকে জড়িয়ে পুড়ে অঙ্গার পপি

মাসুদ আলম:  [২] সোমবার রাতে দুই সন্তান ও কলেজপড়ুয়া ছোট ভাইকে নিয়ে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢাকায় আসছিলেন নাদিরা আক্তার পপি। মঙ্গলবার ভোরে ট্রেনটি যখন ঢাকা ‘বিমানবন্দর স্টেশন পার হয়ে বনানীর কাছাকাছি আসার পর ভেতরে থাকা যাত্রীবেশী নাশকতাকারীরা আগুন দেয়।  চলন্ত ট্রেনে দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে আগুন, ভিড়ে ঠাসা কামরায় দিগি¦দিক ছোটেন যাত্রীরা, হুড়োহুড়ির ভেতর দিয়ে পপির ছোট ভাই হাবিবুর রহমান ও বড় ছেলে রিয়াদ হাসান ফাহিম নিরাপদে ট্রেন থেমে নেমে গেলেও পারেননি নাদিরা আক্তার পপি (৩২)। তিন বছরের ছেলে ইয়াছিন রহমানকে বুকে জড়িয়েই পুড়ে অঙ্গার হয়েছেন পপি।

[৩] বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগের মর্গ  থেকে নিহত পপি ও তার ছোট ছেলের মরদেহ হস্তান্তর করে রেলওয়ে থানা পুলিশ। লাশ গ্রহণ করেন পপির স্বামী মিজানুর রহমান। 

[৪] মিজানুর রহমান বলেন, তিনি কাওরানবাজারে ব্যবসা করেন। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে থাকেন পশ্চিম তেজতুরী বাজার এলাকায়। তার স্ত্রী নাদিরা আক্তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা থেকে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে করে ঢাকায় ফিরছিলেন। ট্রেনে আগুন লাগার পর ফাহিমকে নিয়ে হাবিবুর ট্রেন থেকে নেমে যান। তবে নাদিরা ও ইয়াছিন আটকা পড়ে। 

[৫] তিনি আরও বলেন, ভোর পাঁচটায় হাবিবুর ফোন করে আগুন লাগার খবর দেন। বাসা থেকে দ্রুত তেজগাঁও রেলস্টেশনে এসে দেখি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যখন চারটি লাশ নামায়,  দেখি আমার স্ত্রী-সন্তান পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে। 

[৬] মিজানুর রহমান বলেন, আমার তো সবই শেষ হয়ে গেল। আমি কারও কাছে বিচার চাইব না। এখন একটাই চাওয়া, আমার স্ত্রী-সন্তানকে যেন আর কাটাছেঁড়া করা না হয়। শুধু অক্ষত লাশ ফেরত চাই।

[৭] পপির ভাই হাবিবুর রহমান বলেন, একই পরিবারের সদস্য ও স্বজনসহ ৯ জন ঢাকায় ফিরছিলাম। বিমানবন্দর স্টেশনে নেমে যান ৫ জন।  আর আমরা 'জ' বগিতে ছিলাম ৪ জন। কিছুক্ষণ পরই হঠাৎ ধোঁয়ায় ভরে যায় কামরা। ‘আগুন আগুন’ বলে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু হয় চারদিকে। যখন আমার বোনের মরদেহ উদ্ধার করা হয় তখনও তার বুকে জড়ানো ছিল আমার ভাগনে। সম্পাদনা: ইকবাল খান